বিডিনিউজ ১০ কৃষি ডেস্ক: টার্কি একটি বিশেষায়িত বিদেশি পাখি। উন্নত বিশ্বে বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকায় টার্কির চাহিদা ও জনপ্রিয়তা ব্যাপক। বাংলাদেশে দিন দিন এর জনপ্রিয়তা ও চাহিদা বাড়ছে। এ দেশের আবহাওয়ার সাথে টার্কি সহজেই নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারে। স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায়ও টার্কির মাংস বেশ উপযোগী। এর মাংসে চর্বি ও কোলেস্টেরলের মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম। দেশে মাংসের চাহিদা পূরণে বিশেষ করে ব্রয়লারের বিকল্প হিসেবে টার্কি যথেষ্ট উপাদেয় ও সম্ভাবনাময়।
আর্থিক দিক বিবেচনায় টার্কি পালনে খরচও কম। এরা নরম লতাপাতা, ঘাস, সবজি জাতীয় খাবার বেশ উৎসাহের সঙ্গেই খেয়ে থাকে। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশ ভালো। রাণীক্ষেত, ফাউলপক্সসহ কিছু নির্দিষ্ট রোগের টিকা সময়মতো দিলে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই ঝুঁকিও অনেক কম এবং লাভও বেশি। খামারে পালনের পাশাপাশি বাড়িতে অল্প কিছু মুক্ত অবস্থায়ও স্বাচ্ছন্দে পালন করা যায়।
বর্তমানে অনেক তরুণই আগ্রহ নিয়ে টার্কির খামার গড়ে তুলেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কেউ কেউ শখের বশে অল্প কিছু বাসায়ও পালন করছেন। এতে অনেক বেকার যুবকের ভাগ্য পরিবর্তিত হচ্ছে। অনেক পরিবার স্বচ্ছলতার ছোঁয়া পেয়েছে।
নিতান্তই শখের বশে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের নালী গ্রামের আব্দুল আজিজ খানের ছেলে রেজাউল করিম খান এবং রাকিব খান মিলে গড়ে তুলেছেন একটি টার্কি খামার। পেশায় রেজাউল করিম খান স্কুল শিক্ষক এবং রাকিব খান রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদে চতুর্থ বর্ষে পড়াশোনা করছেন। তাদের খামারে এখন ছোট-বড় প্রায় দেড়শ’ টার্কি রয়েছে।
আশেপাশের এলাকা থেকে আগ্রহী অনেক মানুষ ভিড় জমায় তাদের খামার দেখতে। তাদের দেখাদেখি অনেকেই নতুন করে টার্কি খামার গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন। রেজাউল করিম খান বলেন, ‘টার্কি নিয়ে কাজ করার আগ্রহ আগে থেকেই ছিল। রাকিবের পড়াশোনার সুবাদে সহজেই আমরা খামারটি গড়ে তুলতে পেরেছি। মানসম্মত টার্কির বাচ্চা উৎপাদন ও ফার্মিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নিয়েছি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রেজ্জাকুল হায়দার বলেন, ‘আমাদের দেশে ধীরে ধীরে এর জনপ্রিয়তা ও চাহিদা বাড়ছে। তাদের মতো অনেকেই টার্কির খামার গড়ে তুলছেন। আশা করা যায়, খুব শিগগিরই টার্কি শিল্প দেশে ভালো একটা স্থান পাবে।’